চীনের উহান শহর থেকে শুরু হয়ে বর্তমানে সারা বিশ্বে বৈশ্বিক মহামারি হিসেবে ছড়িয়ে পড়েছে কোভিড-১৯। তবে বড়রাই এ রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে এবং শিশুদের আক্রান্ত হবার হার তুলনামূলক কম।
চীনের একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে ১০ বছরের নিচে কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা মাত্র ১%। তারপরও করোনাভাইরাস মহামারির এ সময়ে শিশুরা একটি স্পর্শকাতর অংশ। তাই শিশুর বাড়তি যত্ন এ সময়ে জরুরি।
শিশুরা সাধারণত শ্বাসতন্ত্রের যেসব সমস্যায় আক্রান্ত হয় তার বেশিরভাগই ভাইরাসজনিত (আরএসভি ও ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস)। যেসব শিশু করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে তাদের অনেকেই ছিল লক্ষণবিহীন কিংবা ছিল মৃদু উপসর্গযুক্ত। তবে জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট থাকতে পারে। কিন্তু শিশুরা এ ভাইরাস ট্রান্সমিশনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই শিশু সর্দি, কাশিতে আক্রান্ত হলে তাদেরকে পরিবারের অন্যান্য বয়স্ক সদস্য থেকে দূরে রাখতে হবে।
পরিবারের কেউ যদি বাইরে যান তাহলে ভাল করে হাত ধুয়ে এবং পরিধেয় কাপড় পরিবর্তন করেই শিশুর কাছে যাবেন। আপনার শিশুকে ঝুঁকিমুক্ত রাখতে তাকে ঘরের ভেতরে রাখুন। স্কুল, কোচিং, মার্কেট বা দূরে কোথাও নিয়ে যাবেন না। প্রয়োজনে অনলাইন ক্লাসের সাহায্য নিতে পারেন। আপনার শিশুকে বারবার হাত ধোয়ার প্রশিক্ষণ দিন। ‘হ্যাপি বার্থডে’ গান দুইবার গাইবার সমপরিমাণ সময় হাত ধুতে তাকে শিখিয়ে দিন।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বাড়ির পরিচ্ছন্নতাও জরুরি। তাই ঘরের মেঝে আসবাবপত্র সবকিছু পরিষ্কার রাখুন। শিশুকে ঘরে রান্না করা পুষ্টিকর খাবার খাওয়ান। যেহেতু গরমে শিশুর ঘাম বেশি হয় তাহলে পানি, ফলের রস বেশি করে খাওয়াতে পারেন। ডিম, মাংস ভালভাবে সিদ্ধ করে খাওয়াবেন।
শারীরিক পরিচর্যার পাশাপাশি শিশুর মানসিক যত্নও গুরুত্বপূর্ণ। কেননা শিশুরা যেহেতু বাইরে যেতে পারছে না, অনেক শিশুই ঘরে বসে বিরক্তিবোধ করছে। ফলে শিশুর মোবাইল, টেলিভিশন ও ভিডিও গেমসের প্রতি আসক্তি বাড়ছে। তাই তাদের সময় কাটার জন্য তাদের সঙ্গে গল্প করতে পারেন। গল্পের বই পড়া, কবিতা শেখা অথবা ইনডোর গেমসগুলো (দাবা, ক্যারাম, সুডুকু) খেলা যেতে পারে। অরিগ্যামি, ছবি আঁকাসহ অন্যান্য সৃজনশীল কাজে উৎসাহ দিন।
এসময়ে শিশু অসুস্থ হলে নিকটস্থ হাসপাতালের দেওয়া হটলাইনে যোগাযোগ করতে পারেন। খুব বেশি দরকার না হলে হাসপাতালে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। ইতোমধ্যে পত্রিকা অথবা টেলিভিশনের মাধ্যমে আপনার সন্তান কোভিড-১৯ সম্পর্কে জেনে ফেলেছে. তাই আপনার গোপনীয়তা কিংবা নিরবতা তাকে এ রোগ থেকে রক্ষা করতে পারবে না, বরং সচেতনতাই পারবে রক্ষা করতে।